• Home
মৎস্যচাষি স্কুল
মৎস্যচাষি স্কুল
  • Home
  • Follow
    • Facebook
Home
রপ্তানীযোগ্য জলজ প্রাণিচাষ

কাঁকড়া চাষ

কাঁকড়া চাষের প্রধান সুবিধাগুলো

  • বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের কাঁকড়া চাষের পরিবেশ বিদ্যমান;
  • আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকায় এর উৎপাদন লাভজনক;
  • বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক পোনা (কিশোর কাঁকড়া) পাওয়া যায়;
  • কাঁকড়ার খাবার স্বল্পমূল্যে সংগ্রহ করা যায়;
  • কাঁকড়া রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায়;
  • কাঁকড়া পানি ব্যতীত অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে এবং প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করতে পারে;
  • পচা আর্বজনা খেয়ে পরিবেশ বিশুদ্ধ করে।

কাঁকড়া চাষের উপযুক্ত পরিবেশ
বাগদা চিংড়ির মতো কাঁকড়া উপকূলীয় লবণাক্ত পানিতে চাষ করা যায়। কাঁকড়া চাষের মাটি ও পানির গুণাবলি নিম্নরূপ হওয়া বাঞ্ছনীয়।
মাটির গুণাবলি
০ নরম দো-আঁশ বা এঁটেল মাটি;
০ হাইড্রাজেন সালফাইড ও এমোনিয়া গ্যাসযুক্ত মাটি;
০ জৈব পদার্থ ৭% থেকে ১২%;
০ এসিড সালফেটমুক্ত মাটি;
০ হালকা শ্যাওলা ও জলজ আগাছামুক্ত পরিবেশ।
পানির গুণাবলি
০ লবণাক্ততা : ১০-২৫ পিপিটি
০ তাপমাত্রা   : ২৫-৩২ সে.
০ পিএইচ      : ৭.৫-৮.৫
০ অ্যালকালিনিটি  :  ৮০ মিগ্রা/লি.
০ হার্ডনেস : ৪০-১০০ পিপিএম
০ দ্রবীভূত অক্সিজেন  : ৪ পিপিএমের ঊর্ধ্বে

পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি

  • কাঁকড়ার জন্য দো-আঁশ বা পলি দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো।
  • পুকুরের আয়তন ০.২-১.০ হেক্টরের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা দিক থেকে ভালো হয়।
  • পুকুরের গভীরতা ১.০-১.৫ মিটার রাখা ভালো।
  • জোয়ার ভাটার পানি পরিবর্তন করা যায় এমন পুকুর কাঁকড়া চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে।
  • পুকুর শুকানোর পর পাড় ভালোভাবে মেরামত করতে হবে।
  • পুকুরে পানি প্রবেশ ও নির্গমনের জন্য পৃথক গেট থাকলে ভালো হয়।
  • কাঁকড়ার পলায়ন স্বভাব রোধকল্পে পুকুরের চারদিকে বানা দিয়ে ঘিরে ফেলতে হবে। খরচ কমানের জন্য বানার পরিবর্তে নাইলন নেটও ব্যবহার করা যায়।
  • মাটির পিএইচের ওপর ভিত্তি করে গুঁড়া করা পাথুরে চুন সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। মাটির পিএইচ ৭-৭.৫ এর মধ্যে হলে হেক্টরপ্রতি ১২৫ কেজি চুন দিতে হবে।
  • চুন প্রয়োগের এক দিনের মধ্যেই পুকুরের পানি তুলে ফেলতে হবে এবং ৭ দিন পর হেক্টরপ্রতি ২০-২৫ কেজি ইউরিয়া এবং ১৫ কেজি টিএসপি সার ছিটিয়ে দিতে হবে।

কাঁকড়া মজুদ

  • সার প্রয়োগের ৩ দিন পর কাঁকড়া মজুদ করতে হয়। বর্তমানে কাঁকড়া চাষ বলতে কাঁকড়া মোটাতাজাকরণকেই বোঝায়। কিশোর কাঁকড়া বাঁশের চাই বা ফাঁদ, পাতা জাল, থলে জাল দিয়ে ধরা যায়।
  • ২০-৪০ গ্রাম ওজনের স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া মজুদের জন্য নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী ও পুরুষের অনুপাত হলো ৯:১ বা ৯০% স্ত্রী এবং ১০% পুরুষ কাঁকড়া মজুদ করা হলে ভালো হয়।
  • রপ্তানির জন্য গোনাড বিশিষ্ট স্ত্রী কাঁকড়াগুলো শনাক্ত করতে হয়। সংখ্যার দিক দিয়ে হেক্টরপ্রতি স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া প্রতি হেক্টরে মজুদের হার হলো আট থেকে দশ হাজার। কাঁকড়া সাধারণত বাঁধন কেটে বিকেল বেলা মজুদ করতে হয়।

খাদ্য প্রয়োগ
শামুক, ঝিনুক, ছোট কাঁকড়া এবং ছোট মাছ কাঁকড়ার প্রিয় খাবার। শামুক ঝিনুকের নরম মাংসল অংশ খেয়ে কাঁকড়ার গোনাড দ্রুত তৈরি হয়, তাছাড়া খরচও কম পড়ে।

গবেষণাপ্রাপ্ত ফলে জানা যায়, সস্তা ও সহজলভ্যতার দিক দিয়ে মাছ ট্রাশ ফিশের বিকল্প খাবার হিসেবে আংশিকভাবে গরু ছাগলের ভুঁড়ি ও চিংড়ির মাথা (মাংসল অংশ) ফ্যাটিনিংয়ের বিভিন্ন অনুপাতে কাঁকড়ার খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন- গরু-ছাগলের ভুঁড়ি ৫০-৭০% এবং ট্রাশ ফিশ ২৫-৫০%, চিংড়ির মাথা ৫০%। গবেষণাপ্রাপ্ত ফলে জানা যায়, এ খাদ্যানুপাতগুলোতে স্ত্রী কাঁকড়ার গোনাড সম্পূর্ণভাবে তৈরি হতে সময় লাগে ১৭-২১ দিন। ওই খাদ্য অনুপাতগুলোর যে কোনো একটি প্রথম দিকে প্রতিদিন কাঁকড়ার দৈহিক ওজনের ৮% হারে এবং শেষের দিকে ৫% হারে সরবরাহ করতে হবে। খাবার প্রয়োগের ক্ষেত্রে ৩ ভাগ করে ১ ভাগ খাবার খুব ভোরে এবং অবশিষ্ট ২ ভাগ সন্ধ্যায় পুকুরে সরবরাহ করতে হবে।

পানি ব্যবস্থাপনা
কাঁকড়ার পুকুরে খাবার হিসেবে প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ মাংস সরবরাহ করতে হয়। যা দ্রুত পচনশীল, তাই কাঁকড়ার পুকুরের পানির গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কাঁকড়ার ফ্যাটিনিংয়ের সময় পানির গুণাগুণ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। অতিরিক্ত খাবার সরবরাহ করা হলেও পানি নষ্ট হতে পারে। পানির গুণাগুণ ভালো রাখতে হলে অমাবস্যা বা পূর্ণিমার জোয়ারের সময় পুকুরের পানি কিছুটা পরিবর্তন করতে হয়।
কাঁকড়া মজুদের ১০ দিন পর থেকেই কাঁকড়ার গোনাড সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়েছে কিনা তা ২-৩ দিন পর পর পরীক্ষা করতে হবে। কাঁকড়াকে বৈদ্যুতিক বাল্বের সম্মুখে ধরে দেখতে হবে কাঁকড়ার দেহের ভেতর দিকে কোনো আলো অতিক্রম করে কি না। যদি আলো অতিক্রম না করে তা হলে বুঝতে হবে কাঁকড়ার গোনাড সম্পূর্ণভাব তৈরি হয়েছে। তাছাড়া গোনাড সম্পূর্ণভাবে তৈরি হলে পুকুরে পানি উঠানোর সময় কাঁকড়া গেটের কাছে এসে ভিড় জমায়।

আহরণ ও বাজারজাতকরণ
কাঁকড়া মজুদের ৩-৪ মাস পর আহরণ করা যায়। আমাদের দেশে মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কাঁকড়া আহরণের উপযুক্ত সময়। কারণ এ সময় পানির গুণাগুণ ও তাপমাত্রা উপযুক্ত পর্যায়ে থাকে।  কাঁকড়া ধরার আগেই পুকুরে খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া স্ত্রী কাঁকড়ার গোনাড তৈরি হলে আহরণ করতে হবে। কাঁকড়া আহরণের লক্ষ্যে পুকুরে পানি প্রবেশ করাতে হবে যাতে কাঁকড়া স্রোতের বিপরীতে গেটের কাছে এসে ভিড় করে। এ সময়ে থোপা (লাঠির মাথায় সুতা দিয়ে বাঁধা মাছের মাথা, ব্যাঙ বা গরু-ছাগলের চামড়াকে স্থানীয় ভাষায় থোপা বলে) দিয়ে কাঁকড়াকে প্রলুব্ধ করে হাতজাল দিয়ে ধরতে হবে। কাঁকড়া ধরার সাথে সাথে বিশেষ নিয়মে কাঁকড়ার পাসহ বেঁধে ফেলতে হবে। ধৃত কাঁকড়া ডিপোতে বাছাই করে গ্রেডিং অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে।

*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।

Facebook Twitter Google+ LinkedIn Pinterest
Next article কুচিয়া চাষ
Previous article ধানক্ষেতে মাছ চাষ পদ্ধতি

Related Posts

পুকুরে মুক্তা চাষ

মিষ্টি জলে মুক্তো চাষের প্রক্রিয়াতে...

কুচিয়া চাষ

হাপায় কুঁচিয়া চাষের সুবিধা যে কোনো...

আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ

গলদা চিংড়ি চাষের সুবিধা: গলদা চিংড়ি...

Leave a Reply Cancel reply

মাছচাষ বিষয়ক পরামর্শ খোঁজ করুন

সাম্প্রতিক পরামর্শ

  • উদ্ভাবক পরিচিতি
  • বাগদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • গলদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • আরগুলোসিস (মাছের উকুন)
  • মাছের ফুলকা পঁচা রোগ
  • ড্রপসি (পেট ফোলা রোগ)
  • মাছের লেজ ও পাখনা পচা রোগ
  • ধানি পোনার চাষ
  • রেনু পোনার চাষ
  • যুব কর্মসংস্থানে মৎস্য ঋণ
  • চাষের পুকুরে মলা ও পুঁটি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন
  • পাবদা ও গুলশা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • দেশী সরপুঁটি মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • বাটা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • শিং মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • মাগুর মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • কৈ মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • ক্ষত রোগ
  • পুকুরে মুক্তা চাষ
  • কুচিয়া চাষ
  • কাঁকড়া চাষ
  • ধানক্ষেতে মাছ চাষ পদ্ধতি
  • পেনে মাছচাষ
  • খাঁচায় মাছচাষ
  • থাই সরপুঁটির চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ
  • শোল মাছ চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে মলা মাছের চাষ
  • পুকুরে কৈ মাছের একক চাষ
  • কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ
  • পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ
  • পুকুরে শিং ও মাগুর মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল
  • মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ পদ্ধতি
  • Good Aquaculture Practice (GAP) [উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলন]
  • মাছ চাষে একোয়ামেডিসিন
  • মাছ চাষের জন্য বারো মাসে জরুরী করণীয়
  • পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা
  • পুকুরে নিয়মিত সার প্রয়োগ
  • পুকুরে নিয়মিত খাদ্য প্রয়োগ
  • ভালো পোনামাছ চেনার উপায় ও পুকুরে পোনামাছ অবমুক্তকরণ
  • পোনা মাছ পরিবহন
  • মাছ চাষের জন্য পুকুর ব্যবস্থাপনা
  • পুকুরে চুন প্রয়োগ
  • রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণ
  • নতুন পুকুর খনন পদ্ধতি
  • Home
  • Back to top