• Home
মৎস্যচাষি স্কুল
মৎস্যচাষি স্কুল
  • Home
  • Follow
    • Facebook
Home
মাছের রোগবালাই

ক্ষত রোগ

মাছের ক্ষতরোগের ইতিহাস: বাংলাদেশে ১৯৮৮ সালে সর্বপ্রথম মাছের ক্ষতরোগ সনাক্ত করা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় এরও আগে ১৯৭২ সালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এভাবে পর্যায়ক্রমে নিউগিনি, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কম্পুচিয়া, লাওস, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।

 

আক্রমণের সময়: শীতের শুরুতেই সাধারণত এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এ সময়ে পুকুরের পানি কমে যাওয়ার কারণে ক্ষতরোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

 

আক্রান্ত মাছের প্রজাতি: বাংলাদেশে প্রায় ৩২ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ এ রোগ হয়। যেমন: টাকি, শোল, পুঁটি, বাইম, কই, শিং, মৃগেল, কাতলসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছে এ রোগ হয়।

 

রোগের কারণ: এ রোগের মূল কারণ এ্যাফানোমাইসিস ইনভাডেনস্ নামক ছত্রাক। পানির গুনাগুনের অবনতি ঘটলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

  • হঠাৎ তাপমাত্রার কমতি (১৯০ সে: এর কম)
  • পি.এইচ এর কমতি (৪-৬)
  • এ্যালকালিনিটির কমতি (৪৫-৭৪ পিপিএম)
  • হার্ডনেসের কমতি (৫০-৮০ পিপিএম)
  • ক্লোরাইডের স্বল্পতা (৩-৬ পিপিএম)

 

রোগের লক্ষণ:

  • প্রথমে মাছের গায়ে ছোট ছোট লাল দাগ দেখা যায়।
  • লাল দাগে ঘা ও ক্ষত হয়।
  • ক্ষতে চাপ দিলে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হয়।
  • লেজের অংশ খসে পড়ে।
  • মাছের চোখ নষ্ট হতে পারে।
  • মাছ ভারসাম্যহীনভাবে পানির ওপরে ভেসে থাকে।
  • মাছ খাদ্য খায় না।
  • আক্রান্ত মাছ ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মারা যায়।

 

প্রতিকার:

  • জলাশয়ের সুস্থ ও স্বাভাবিক দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখাই হবে এ রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা।
  • শীতের শুরুতে ১৫ থেকে ২০ দিন অন্তর অন্তর পুকুরে প্রতি শতাংশে আধা কেজি ডলোচুন ও আধা কেজি লবণ মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
  • পুকুর আগাছামুক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • জৈবসার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।
  • জলাশয়ের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে হবে।
  • মাছের ঘনত্ব কম রাখতে হবে।

ক্ষতরোগ হওয়ার আগে এসব ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

প্রতিরোধ: ক্ষতরোগ একবার চলে এলে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। রোগের বিভিন্ন জীবাণু যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্যারাসাইট ও ছত্রাক ক্ষতের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে রোগটিকে জটিল করে তোলে। তবুও যেসব পদ্ধতি নেয়া যায় তা নিম্নরূপ-

  • নিমবীজ গুঁড়া করে পুকুরে প্রয়োগ করা (শতাংশে ১ কেজি)।
  • ২-৪ পিপিএম (মি.গ্রাম/লি.) পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণে আক্রান্ত মাছকে ১ মিনিট গোসল
  • ডিমওয়ালা মাছকে পুকুরের কোনার স্বল্পপরিসরে নিয়ে এসে জালের মধ্যে মাছগুলোকে ০.৫ পিপিএম পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্বারা ধোয়া। এভাবে পর পর তিন-চার দিন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • ১২৫ পিপিএম (মি.গ্রাম/লি.) ফরমালিন দ্রবণে মাছকে গোসল করানো।
  • পুকুরে ১ পিপিএম (মি.গ্রাম/লি.) হারে পটাশ প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  • শতাংশে ৫০০ গ্রাম চুন + ৫০০ গ্রাম লবন।

 

সতর্কতা: আগাম সতর্কতামূলক কিছু ব্যবস্থা নিলে পুকুরে এ রোগ সংক্রমনের শঙ্কা অনেকটা কমে যায়। শীত শুরুর আগে পুকুরে যখন আস্তে আস্তে পানির পরিমাণ কমতে থাকে তখন বিশেষ করে আশ্বিন-কার্তিক মাসে শতাংশে আধা কেজি হারে চুন ও লবন ক্ষতরোগের আক্রমণ থেকে নিশ্চিত অব্যাহতি পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে হলে আপনার পাশের উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।

Facebook Twitter Google+ LinkedIn Pinterest
Next article কৈ মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
Previous article পুকুরে মুক্তা চাষ

Related Posts

আরগুলোসিস (মাছের উকুন)

আক্রান্ত মাছের প্রজাতি: রুই, মৃগেল এবং...

মাছের ফুলকা পঁচা রোগ

আক্রান্ত মাছ: কার্প জাতীয় মাছ। পোনা মাছে...

ড্রপসি (পেট ফোলা রোগ)

আক্রান্ত মাছ: একুয়ারিয়াম ফিশ, কার্পজাতীয়...

Leave a Reply Cancel reply

মাছচাষ বিষয়ক পরামর্শ খোঁজ করুন

সাম্প্রতিক পরামর্শ

  • উদ্ভাবক পরিচিতি
  • বাগদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • গলদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • আরগুলোসিস (মাছের উকুন)
  • মাছের ফুলকা পঁচা রোগ
  • ড্রপসি (পেট ফোলা রোগ)
  • মাছের লেজ ও পাখনা পচা রোগ
  • ধানি পোনার চাষ
  • রেনু পোনার চাষ
  • যুব কর্মসংস্থানে মৎস্য ঋণ
  • চাষের পুকুরে মলা ও পুঁটি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন
  • পাবদা ও গুলশা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • দেশী সরপুঁটি মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • বাটা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • শিং মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • মাগুর মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • কৈ মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • ক্ষত রোগ
  • পুকুরে মুক্তা চাষ
  • কুচিয়া চাষ
  • কাঁকড়া চাষ
  • ধানক্ষেতে মাছ চাষ পদ্ধতি
  • পেনে মাছচাষ
  • খাঁচায় মাছচাষ
  • থাই সরপুঁটির চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ
  • শোল মাছ চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে মলা মাছের চাষ
  • পুকুরে কৈ মাছের একক চাষ
  • কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ
  • পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ
  • পুকুরে শিং ও মাগুর মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল
  • মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ পদ্ধতি
  • Good Aquaculture Practice (GAP) [উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলন]
  • মাছ চাষে একোয়ামেডিসিন
  • মাছ চাষের জন্য বারো মাসে জরুরী করণীয়
  • পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা
  • পুকুরে নিয়মিত সার প্রয়োগ
  • পুকুরে নিয়মিত খাদ্য প্রয়োগ
  • ভালো পোনামাছ চেনার উপায় ও পুকুরে পোনামাছ অবমুক্তকরণ
  • পোনা মাছ পরিবহন
  • মাছ চাষের জন্য পুকুর ব্যবস্থাপনা
  • পুকুরে চুন প্রয়োগ
  • রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণ
  • নতুন পুকুর খনন পদ্ধতি
  • Home
  • Back to top