• Home
মৎস্যচাষি স্কুল
মৎস্যচাষি স্কুল
  • Home
  • Follow
    • Facebook
Home
বিভিন্ন প্রজাতির মাছচাষ পদ্ধতি

থাই সরপুঁটির চাষ

থাই সরপুঁটি চাষের সুবিধা

  • এরা অতি দ্রুত বর্ধনশীল ও সুস্বাদু।
  • পতিত জলাশয়, ডোবা, ছোট বড় সবধরনের পুকুর ও দীঘিসহ সকল ধরনের জলাশয় এমনকি যেখানে বছরে ৩-৪ মাস পানি থাকে সেসব জায়গায়ও থাই সরপুঁটি চাষ করা যায়।
  • ঘোলা পানিতেও থাই সরপুঁটির চাষ করা যায়।
  • অল্প সময়, স্বল্প শ্রম ও স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভ।
  • এরা প্রাকৃতিক খাদ্য বেশি পছন্দ করে।
  • প্রতিকূল পরিবেশেও এরা টিকে থাকে। তুলনামূলকভাবে কম অক্সিজেন ও বেশী তাপমাত্রাযুক্ত পানিতে টিকে থাকতে পারে।বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ থাই সরপুঁটির জন্য খুবই উপকারী।
  • এ মাছের রোগ বালাই কম।
  • থাই সরপুঁটি মাত্র ছয় মাসেই বাজারজাতকরণ উপযোগী ১০০-১৫০ গ্রাম ওজনের হয়। ফলে বছরে দুই বার চাষ করা যায়।

 

স্থান নির্বাচন ও পুকুরের বৈশিষ্ট্য

  • পুকুর রৌদ্র আলোকিত খোলামেলা জায়গায় হাওয়া উত্তম এবং পাড়ে ঝোপ- জঙ্গল থাকলে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। পাড়ে বড় গাছপালা থাকলে সেগুলোর ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে এবং দিনে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা রৌদ্রালোক পড়া নিশ্চিত করতে হবে।
  • ব্যবস্থাপনা সুবিধার জন্য পুকুর আয়তকার হতে হবে

 

স্থান নির্বাচন ও পুকুরের বৈশিষ্ট্য

  • পুকুরের আয়তন ১৫-৩০ শতাংশের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা করতে সুবিধা হয়, তবে পুকুরের আয়তন ৫০ শতাংশের বেশি না হওয়াই উত্তম।
  • পুকুরের গড় গভীরতা ৪.৫-৫.৫ ফুট হলে ভাল হয়, যেখানে বৎসরে ন্যূনতম ৫-৬ মাস পানি থাকে।
  • বন্যামুক্ত ও বসতবাড়ীর আশে পাশে।

 

পুকুর প্রস্তুতি

  • প্রথমে পুকুরকে সেচের মাধ্যমে শুকিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ১৮-২৫ গ্রাম রোটেনন পাউডার দিয়ে সব ধরনের মাছ অপসারণ করা যায়।
  • পুকুরের তলায় কাদা হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকলে হালকা করে কিছু বালি (দালান-কোঠা নির্মাণের জন্য যে বালু ব্যবহৃত হয়) ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে। এর ফলে পুকুরের তলায় গ্যাস হবে না, পানি পরিষ্কার এবং পরিবেশ ভাল থাকবে।
  • রোটেনন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি তথা প্রাকৃতিক খাদ্যে বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পুকুর প্রস্তুতির শেষ ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়। চুন প্রয়োগের ৪-৫ দিন পর শতকে ১০০-১৫০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৫০-৭৫ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করা হয়।

 

পোনা মজুদ

  • সার প্রয়োগের সাত দিনের মধ্যে পুকুরের পানির রং হালকা সবুজাভ রং ধারণ করলে শতাংশ প্রতি ৪-৬ সে.মি. আকারের ৮০-১০০টি থাই সরপুঁটির পোনা মজুদ করতে হবে।
  • মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ১০-১৫টি কার্প জাতীয় মাছের পোনা মজুদ করা যেতে পারে।
  • পরিবহন জনিত কারণে পোনার শরীরে ক্ষত হতে পারে তাই বালতিতে ১০ লি. পানি নিয়ে এর মধ্যে ২০০ গ্রাম খাবার লবণ অথবা ১ চা চামচ KMnO4 মিশাতে হবে। অতঃপর বালতির উপর একটি ঘন জাল রেখে তার মধ্যে ২০০-৩০০টি পোনা ছাড়তে হবে।
  • যদি সম্ভব হয় পোনা ছাড়ার সময় থেকে ৫-৬ ঘন্টা পুকুরে হালকা পানির প্রবাহ রাখতে হবে।

 

খাদ্য ব্যবস্থাপনা

  • পোনা ছাড়ার পর দিন থেকে পুকুরে মজুদকৃত মাছের দেহ ওজনের ৪-৫ ভাগ হারে চালের কুঁড়া দৈনিক ২ বার খাবার হিসেবে দিতে হবে।
  • চালের কুঁড়ার পাশাপাশি এ মাছের প্রিয় খাবার ক্ষদিপানা বা নরম ঘাস পরিমাণমত পুকুরে সরবরাহ করলে ভাল উৎপাদন পাওয়া যাবে।
  • পুকুরে পরিমিত প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরির জন্য ১৫ দিন পর পর শতাংশ প্রতি ৫০-৭৫ গ্রাম ইউরিয়া এবং ২৫-৩৫ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে।

 

থাই সরপুঁটির রোগ ও প্রতিকার

  • মাছ নিয়মিত বাড়ছে কিনা এবং মাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে কিনা জাল টেনে মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করতে হবে।
  • ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ফাংগাস জনিত কোন রোগ যেন না হয় তার জন্য আগে থেকেই প্রতি শতাংশ ১ গ্রাম হারে Timsen (টিমসেন) ১৫ দিন পর পর ব্যবহার করতে হবে।

 ক্ষত রোগ: ৫০০ গ্রাম চুন + ৫০০ গ্রাম লবন

ক্ষত রোগের প্রাদুর্ভাব হলে পুকুরে জীবানুনাশক (টিমসেন – ৮০ গ্রাম/বিঘা (১ম ডোজ) ও ৫০ গ্রাম/বিঘা (২৪ ঘন্টা পর ২য় ডোজ) ব্যবহার করতে হবে। একই সাথে এন্টিবায়োটিক হিসাবে ২ গ্রাম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন প্রতি কেজি খাবারের সাথে মিশিয়ে ৭ দিন প্রয়োগ করতে হবে ।

 

অন্যান্য ব্যবস্থাপনা

  • পুকুরের পানি ভালো রাখার জন্য ১৫ দিন পর পর হররা টেনে দিতে হবে।
  • চাষকালীন সময়ে শামুকের আধিক্য পরিলক্ষিত হলে শতাংশ প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগে শামুকের আধিক্য কমবে।
  • অ্যামোনিয়া গ্যাস দূর করার জন্য অ্যামোনিল (প্রতি একরে ২০০ মি.লি.) ব্যবহার করতে পারেন।
  • মাছ নিয়মিত খাবার খায় কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
  • ক্ষত রোগ থেকে মাছকে মুক্ত রাখতে প্রতি মাসে একবার পুকুরে জিওলাইট অথবা চুন দিতে হবে (শতকে ২০০ গ্রাম)।
  • ১৫ দিনে একবার নমুনা সংগ্রহ করে গড় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে মোট খাদ্যের পরিমাণ ঠিক করে নিতে হবে।
  • প্রতি ১৫ দিনে একবার প্রোবায়োটিক ব্যবহার করলে মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও পানির পরিবেশ ভাল থাকবে।
  • এক পুকুরের জাল অন্য পুকুরে ব্যবহারের আগে ভাল পানির সাথে জিবাণু নাশক পটাশ মিশিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
  • গ্রীষ্মকালে অনেক সময় পুকুরের পানি কমে যায় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তখন অনেক সময় পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এরকম পরিস্থিতিতে খাবার প্রয়োগ কমিয়ে দিতে হবে।
  • একটানা মেঘলা আবহাওয়ায় কিংবা অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে অথবা একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে।
  • অনেক সময় বক, মাছরাঙা, জলজ পাখি থেকে রোগ জীবাণুর সৃষ্টি হয়। তাই পুকুরের চারদিকে রঙিন ফিতা টানিয়ে দিন।

 

আহরণ ও বিক্রয়

  • ৫-৬ মাসে মাছের গড় ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম হলে জাল টেনে সব মাছ ধরে বিক্রয় করতে হবে।
  • ২৫ শতাংশ পুকুরে থাই সরপুঁটি চাষে ছয়মাসে ৯০০০ টাকা খরচ হয়। মাছ বিক্রয় ২০০০০/-, সুতরাং নীট লাভ হয় ১১০০০/-

*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।

Facebook Twitter Google+ LinkedIn Pinterest
Next article খাঁচায় মাছচাষ
Previous article আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ

Related Posts

আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ

পাবদা মাছ আমাদের সবারই পরিচিত এবং...

শোল মাছ চাষ

শোল মাছ আমাদের দেশে এখন প্রায় বিলুপ্ত...

আধুনিক পদ্ধতিতে মলা মাছের চাষ

মলা মাছের প্রজনন: মলা মাছ প্রথম বছরেই...

Leave a Reply Cancel reply

মাছচাষ বিষয়ক পরামর্শ খোঁজ করুন

সাম্প্রতিক পরামর্শ

  • উদ্ভাবক পরিচিতি
  • বাগদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • গলদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • আরগুলোসিস (মাছের উকুন)
  • মাছের ফুলকা পঁচা রোগ
  • ড্রপসি (পেট ফোলা রোগ)
  • মাছের লেজ ও পাখনা পচা রোগ
  • ধানি পোনার চাষ
  • রেনু পোনার চাষ
  • যুব কর্মসংস্থানে মৎস্য ঋণ
  • চাষের পুকুরে মলা ও পুঁটি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন
  • পাবদা ও গুলশা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • দেশী সরপুঁটি মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • বাটা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • শিং মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • মাগুর মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • কৈ মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • ক্ষত রোগ
  • পুকুরে মুক্তা চাষ
  • কুচিয়া চাষ
  • কাঁকড়া চাষ
  • ধানক্ষেতে মাছ চাষ পদ্ধতি
  • পেনে মাছচাষ
  • খাঁচায় মাছচাষ
  • থাই সরপুঁটির চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ
  • শোল মাছ চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে মলা মাছের চাষ
  • পুকুরে কৈ মাছের একক চাষ
  • কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ
  • পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ
  • পুকুরে শিং ও মাগুর মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল
  • মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ পদ্ধতি
  • Good Aquaculture Practice (GAP) [উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলন]
  • মাছ চাষে একোয়ামেডিসিন
  • মাছ চাষের জন্য বারো মাসে জরুরী করণীয়
  • পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা
  • পুকুরে নিয়মিত সার প্রয়োগ
  • পুকুরে নিয়মিত খাদ্য প্রয়োগ
  • ভালো পোনামাছ চেনার উপায় ও পুকুরে পোনামাছ অবমুক্তকরণ
  • পোনা মাছ পরিবহন
  • মাছ চাষের জন্য পুকুর ব্যবস্থাপনা
  • পুকুরে চুন প্রয়োগ
  • রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণ
  • নতুন পুকুর খনন পদ্ধতি
  • Home
  • Back to top