সুষম পুষ্টিকর খাদ্য ছাড়া মাছের সন্তোষজনক উৎপাদন আশা করা যায় না। সুষম খাদ্যের উপাদানগুলো হচ্ছে আমিষ, শ্বেতসার, ভিটামিন, তৈল, খনিজ লবণ ও পানি। প্রাকৃতিক নিয়মে পুকুরে মাছের যে খাবার (প্লাঙ্কটন) উৎপাদন হয়, তা মাছের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা মেটাতে মোটেই যথেষ্ট নয়।
প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি সম্পূরক খাবার মাছের উৎপাদন বাড়াতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই স্বল্প সময়ে স্বল্পায়তনের জায়গা থেকে মাছের অধিক ফলন পেতে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ অত্যাবশ্যক।
মাছের সম্পূরক খাদ্য তৈরির জন্য সচরাচর ব্যবহারযোগ্য উপাদানগুলো হচ্ছে চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, ফিশমিল, গরু-ছাগলের রক্ত, নাড়িভুঁড়ি, রেশম কীট এবং জলজ উদ্ভিদ যেমন, কচুরিপানা, খুদেপানা, কুটিপানা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, সুষম খাদ্য তৈরির জন্য সাধারণত মোট খাদ্যের ০.৫-২% ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ প্রয়োজন হয় এবং খাবার বেশি সময় স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাইন্ডার হিসেবে আটা, ময়দা অথবা চিটাগুড়ের ব্যবহার অতীব জরুরি বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
প্রজাতি, বয়স ও আকারভেদে মাছ ও চিংড়ির খাদ্য চাহিদা ভিন্নতর হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনার ক্ষেত্রে দেহ ওজনের ১০-২৫%, আঙ্গুলে পোনার ক্ষেত্রে দেহ ওজনের ৫-২০% এবং বড় মাছের জন্য দেহ ওজনের ২-৫% হারে সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করা আবশ্যক। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও চিংড়ির খাদ্যের চাহিদা নিম্নের সারণিতে দেয়া হ’ল।
প্রজাতি | পোনা মাছ (দেহ ওজনের শতকরা হার) | আঙ্গুলে পোনা মাছ (দেহ ওজনের শতকরা হার) | বড় বা প্রজননক্ষম পোনা মাছ (দেহ ওজনের শতকরা হার) |
রুই জাতীয় মাছ | ১০-২০ | ৫-১০ | ২-৫ |
মাগুর জাতীয় মাছ | ১০-২৫ | ৫-১৫ | ৩-৭ |
কৈ মাছ | ১৫-২৫ | ৫-২০ | ৪-১০ |
চিংড়ি | ১০-২৫ | ৫-১৫ | ৩-৮ |
*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।
Leave a Reply