• Home
মৎস্যচাষি স্কুল
মৎস্যচাষি স্কুল
  • Home
  • Follow
    • Facebook
Home
বিভিন্ন প্রজাতির মাছচাষ পদ্ধতি

পুকুরে শিং ও মাগুর মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল

শিং ও মাগুর মাছ চাষের সুবিধা

  • বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় শিং ও মাগুর মাছ চাষ করে প্রচুর মুনাফা পাওয়া যায়।
  • চাষ পদ্ধতি সহজ। যে কোনো ধরনের জলাশয়ে এমনকি চৌবাচ্চা ও খাঁচাতে ও চাষ করা যায়।
  • প্রতিকূল পরিবেশে যেমন-অক্সিজেন স্বল্পতা, পানির অত্যাধিক তাপমাত্রা, এমনকি পচা পানিতেও এরা বেঁচে থাকে।
  • অল্প পানিতে ও অধিক ঘনত্বে চাষ করা যায়।
  • রোগবালাই খুব কম হয় ও অধিক সহনশীল।
  • অল্প পানিতে এমনকি পানি ছাড়াও এরা দীর্ঘক্ষণ বেঁচে থাকে বলে জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়।
  • সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে অল্প সময়েই (৬-৭ মাস) বাজারজাত করার উপযোগী হয়।
  • একক চাষ ছাড়াও অন্যান্য কার্প মাছ, তেলাপিয়া মাছের সাথে পুকুরে মিশ্র চাষ করা যায়।

 

স্থান নির্বাচন ও পুকুরের বৈশিষ্ট্য

  • ব্যবস্থাপনা সুবিধার জন্য পুকুর আয়তকার হতে হবে
  • পুকুরের আয়তন ২০-৫০ শতাংশের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা করতে সুবিধা হয়, তবে পুকুরের আয়তন ১০০ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না
  • পুকুরের গড় গভীরতা ৪.৫-৫.৫ ফুট হলে ভাল হয়, যেখানে বৎসরে ৬-৮ মাস পানি থাকে।
  • বন্যামুক্ত ও বসতবাড়ীর আশে পাশে।

 

পুকুর প্রস্তুতি

  • প্রথমে পুকুরকে সেচের মাধ্যমে শুকিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ১৮-২৫ গ্রাম রোটেনন পাউডার দিয়ে সব ধরনের মাছ অপসারণ করা যায়।
  • রোটেনন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি তথা প্রাকৃতিক খাদ্যে বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পুকুর প্রস্তুতির শেষ ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়। চুন প্রয়োগের ৪-৫ দিন পর শতকে ১০০-১৫০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৫০-৭৫ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করা হয়।

 

পোনা মজুদ

  • পুকুরে সার প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর ২-৩ ইঞ্চি সাইজের একক চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ২৫০ টি মাগুর ও ৪০০ টি শিং দেওয়া যেতে পারে।
  • তবে মিশ্র চাষে শতাংশে মাগুর ১৫০ টি ও শিং ২০০ টি ছাড়তে হবে।
  • একই সাথে ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে নিবিড় শিং-মাগুর চাষের ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ৩-৫ টি কাতলা মাছের পোনা ছাড়া যেতে পারে।
  • শিং-মাগুর চাষ শুরু করার আদর্শ সময় এপ্রিল – মে।

 

খাদ্য ব্যবস্থাপনা

  • পোনা মজুদের পরের দিন থেকে মাছকে তার দেহ ওজনের ১০-১২ ভাগ দৈনিক খাবার দিতে হবে। দিনে দু বেলা হলে সকালে একবার অর্ধেক বিকালে অর্ধেক।
  • প্রতি ১৫ দিন অন্তর খাদ্য প্রয়োগের হার ১% করে কমাতে হবে।
  • মাছের ওজন ৫০ গ্রামের উর্ধ্বে উঠলে খাদ্য প্রয়োগের পরিমাণ হবে তার দেহ ওজনের শতকরা ৫ ভাগ।
  • শিং মাগুর মাছের চাষের ক্ষেত্রে ৩৫-৪০% প্রাণিজ প্রোটিন সমৃদ্ধ পিলেট খাদ্য ব্যবহার অপরিহার্য।
  • বাজরে শিং, মাগুরের আলাদা খাদ্য পাওয়া যায় অথবা পাংগাস ফিড গ্রোয়ার-১ দেয়া যেতে পারে।
  • ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে পানির তাপমাত্রা আসলে শিং-মাগুর খাদ্য গ্রহন কমিয়ে দেয় এবং ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসলে খাদ্য গ্রহন বন্ধ করে দেয়।

 

শিং ও মাগুর মাছের রোগ ও প্রতিকার

  • মাছ নিয়মিত বাড়ছে কিনা এবং মাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে কিনা জাল টেনে মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করতে হবে।
  • শিং ও মাগুর মাছে সাধারণত কোনো রোগ হয় না। তবে মাঝে মাঝে শীতকালে ক্ষত রোগ, লেজ ও পাখনা পচা রোগ এবং পেট ফোলা রোগ দেখা যায়।

ক্ষত রোগ: ৫০০ গ্রাম চুন + ৫০০ গ্রাম লবন

লেজ বা পাখনা পচা রোগ: প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পারমেঙ্গানেট মিশ্রিত করে আক্রান্ত মাছকে ৩-৫ মিনিট গোসল করাতে হবে।

পেট ফোলা রোগ: রেনামাইন/একুয়ামাইসিন + ভিটা টেক-সি

 

অন্যান্য ব্যবস্থাপনা

  • বেড়া/নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন: বর্ষায় নতুন পানি এলে শিং-মাগুর মাছ পাড় বেয়ে চলে যেতে পারে। তাই পোনা মজুদের এক মাসের মধ্যে পুকুরের পাড়ের উপরিতলে মজবুত করে ৩ ফুট উঁচু বেড়া/বেষ্টনি দিয়ে পুকুর হতে শিং-মাগুর মাছ বেরিয়ে যাওয়া রোধ করতে হবে। কিছু কিছু খামারে স্বল্প মূল্যের টিন দিয়েও বেড়া দিতে দেখা যায়। এসব স্বল্প মূল্যের টিন ২-৩ বছর টিকে থাকে।
  • পুকুরের পানি ভালো রাখার জন্য ১৫ দিন পর পর হররা টেনে দিতে হবে।
  • চাষকালীন সময়ে শামুকের আধিক্য পরিলক্ষিত হলে শতাংশ প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগে শামুকের আধিক্য কমবে।
  • মাসে ১ বার ২০-২৫% পানি পরিবর্তন করতে হবে।
  • অ্যামোনিয়া গ্যাস দূর করার জন্য অ্যামোনিল (প্রতি একরে ২০০ মি.লি.) ব্যবহার করতে পারেন।

 

আহরণ ও বিক্রয়

  • শিং ও মাগুর মাছের চাষ পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরন করা হলে ৬-৭ মাসে বাজারজাতকরনের উপযোগী হয়। এ সময় শিং মাছের গড় ওজন ৭৫-১০০ গ্রাম এবং মাগুর মাছের গড় ওজন ৯০-১০০ গ্রাম হয়ে থাকে।
  • হিসেব করে দেখা গেছে যে, এক বিঘার একটি পুকুরে শিং ও মাগুর চাষ করে ৯০,০০০/- লাভবান হওয়া যায়।

*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।

Facebook Twitter Google+ LinkedIn Pinterest
Next article পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ
Previous article মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ পদ্ধতি

Related Posts

থাই সরপুঁটির চাষ

থাই সরপুঁটি চাষের সুবিধা এরা অতি দ্রুত...

আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ

পাবদা মাছ আমাদের সবারই পরিচিত এবং...

শোল মাছ চাষ

শোল মাছ আমাদের দেশে এখন প্রায় বিলুপ্ত...

Leave a Reply Cancel reply

মাছচাষ বিষয়ক পরামর্শ খোঁজ করুন

সাম্প্রতিক পরামর্শ

  • উদ্ভাবক পরিচিতি
  • বাগদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • গলদা চিংড়ির রোগ ও রোগ ব্যবস্থাপনা
  • আরগুলোসিস (মাছের উকুন)
  • মাছের ফুলকা পঁচা রোগ
  • ড্রপসি (পেট ফোলা রোগ)
  • মাছের লেজ ও পাখনা পচা রোগ
  • ধানি পোনার চাষ
  • রেনু পোনার চাষ
  • যুব কর্মসংস্থানে মৎস্য ঋণ
  • চাষের পুকুরে মলা ও পুঁটি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন
  • পাবদা ও গুলশা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • দেশী সরপুঁটি মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • বাটা মাছের প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • শিং মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • মাগুর মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • কৈ মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  • ক্ষত রোগ
  • পুকুরে মুক্তা চাষ
  • কুচিয়া চাষ
  • কাঁকড়া চাষ
  • ধানক্ষেতে মাছ চাষ পদ্ধতি
  • পেনে মাছচাষ
  • খাঁচায় মাছচাষ
  • থাই সরপুঁটির চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে পাবদা মাছের চাষ
  • শোল মাছ চাষ
  • আধুনিক পদ্ধতিতে মলা মাছের চাষ
  • পুকুরে কৈ মাছের একক চাষ
  • কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ
  • পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ
  • পুকুরে শিং ও মাগুর মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল
  • মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ পদ্ধতি
  • Good Aquaculture Practice (GAP) [উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলন]
  • মাছ চাষে একোয়ামেডিসিন
  • মাছ চাষের জন্য বারো মাসে জরুরী করণীয়
  • পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা
  • পুকুরে নিয়মিত সার প্রয়োগ
  • পুকুরে নিয়মিত খাদ্য প্রয়োগ
  • ভালো পোনামাছ চেনার উপায় ও পুকুরে পোনামাছ অবমুক্তকরণ
  • পোনা মাছ পরিবহন
  • মাছ চাষের জন্য পুকুর ব্যবস্থাপনা
  • পুকুরে চুন প্রয়োগ
  • রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণ
  • নতুন পুকুর খনন পদ্ধতি
  • Home
  • Back to top