রোগের নাম | রোগের কারণ | রোগের লক্ষণ | প্রতিকার |
হোয়াইট স্পট বা চায়না ভাইরাস রোগ | হোয়াইট স্পট বা চায়না ভাইরাস এই রোগের কারণ | * চিংড়ি পোনা ঘেরে ছাড়ার ৩০-৭০ দিনের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। প্রথম দিকে রোগের কোন বাহ্যিক লক্ষণ দেখা যায়না।
* ৩/৪ দিন পর রোগর তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। চিংড়ি পাড়ের কাছে জড়ো হয় এবং গায়ে, মাথায় খোলসে সাদা সাদা স্পট দেখা যায় এবং নির্লাভ বা লালচে হয়ে যায়। |
* তেমন কোন চিকিৎসা নেই। আজে বাজে ঔষধ বা কেমিক্যাল ব্যবহার না করে পানির গুণগত মান উন্নত করতে হবে।
* ঘেরের তলদেশের পচাঁ কাদা মাটি তুলে ফেলুন। চুন সার দিয়ে জমি প্রত্তুত করতে হবে। অন্য রোগাক্রান্ত খামারের বজ্য পারন যাতে ঘেরে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সতক দৃষ্টি রাখতে হবে। |
মস্তক হলুদ রোগ | Yellow Head নামক ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়। | * যকৃত অগ্ন্যাশয় গ্রন্হি, ফ্যাকাশে হবার ফলে মস্তক হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
* পোনা মজুদের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে এ রোগ ধরা পড়ে। এরোগে ও ব্যাপক আকারে চিংড়ি মারা যায়। |
* এরোগে চিকিৎসায় ঔষধে কাজ হয়না। ফাইটো ফ্লাংকটন চাষ করলে এ রোগ অনেকটা নিয়ন্তণে রাখা যায়।
* খামারের তলদেশে ভালমত রোদে শুকিয়ে চাষ করে ব্লিচিং পাউডার/চুন দিয়ে ভাল করে মাটি শোধন করে নিতে হবে। |
চিংড়ির কালো ফুলকা রোগ | পুকুরের তলায় মাত্রাতিরিক্ত হাইড্রোজেন সালফাইট এবং অন্যান্য জৈব পদার্থের কারণে এ রোগ দেখা যায়। | * এরোগে চিংড়ির ফুলকায় কাল দাগ ও পচন দেখা যায়।
* খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখা যায়। * আক্রান্ত চিংড়ি ধীরে ধরে মারা যায়। |
* পুকুরের তলদেশে আচড়িয়ে দিয়ে বা হররা টেনে দ্রুত পানি পরিবর্তনের ফলে এরোগে উন্নতি হয়।
* মিথাইলিন ব্লু ব্যবহার করে ভাল ফল পাওয়া যায়। * Ascorbic acid 2000 mg/কেজি খাদ্যে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালফল পাওয়া যায়। |
কাল দাগ রোগ | এটা চিংড়ির এক মারাত্নক ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। পুকুরের অত্যধিক জৈব পদার্থ থাকার কারণে এ রোগ হয়। | * চিংড়ির খোলস লেজ ও ফুলকায় কাল কাল দাগ হয়।
* খোলসের গায়ে ছিদ্র হয়। * পরবর্তীতে ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে চিংড়ি মারা যায়। |
* দ্রুত পানি পরিবতন এবং প্যাডেল হুইলের সাহায্যে বায়ু সঞ্চালনের রোগের প্রকোপ কমে যায়।
* মিথাইল ব্লু (২-৫ পিপিএম) পানিতে ব্যবহার করে রোগ নিরাময় করা যায়। * পুকুরের তলায় পঁচা কাদা মাটি তুলে, ভাল মত শুকিয়ে চুন-সার দিয়ে পুকুর ভালভাবে প্রস্তুত করতে হবে। |
খোলস নরম রোগ | ক্যালসিয়াম জনিত পুষ্ঠির অভাবে এ রোগ হয়। অনেকে এক স্পঞ্জ রোগ বলে। পানির লবণাক্ততা কমে গেলে ও এ রোগে বাগদা চিংড়ি আক্রান্ত হতে পারে। | * খোলস বদলানোর ২৪ ঘন্টা পর ও শক্ত হয় না, কম বাড়ে ও ক্রমশঃ দূবল হয়ে মারা যায়। | * ক্যালসিয়ামসহ সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করে পুষ্টির অভাব দুর করতে পারলে এ রোগ ভাল হয়।
* পানিতে শতাংশে ১ কেজি পরিমান পাথুরে চুন প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। * ভাল মত পুকুর শুকিয়ে চুন দিয়ে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। রোগের আক্রমণ হলে বড় চিংড়ি ধরে পেলতে হবে। * খামারে পানি নিষ্কাশনে ও প্রবেশের পৃথক ব্যবস্থা রাখতে হবে। |
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম
- চিংড়ি ঘেরের আকার ছোট করুন ও আলাদা নার্সারীর ব্যবস্থা করুন।
- পোনা মজুদহার একর প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজারের মধ্যে রাখুন।
- ঘের ভূক্ত আলাদা নাসারীতে চিংড়ি পোনা ২-৩ সপ্তাহ প্রতিপালনের পর চাষের ঘেরে নালা কেটে বের করে দিন।
- প্রস্তুত কালীন সময়ে পরিমিত চুন (কমপক্ষে শতাংশে ১ কেজি) প্রয়োগ করুন।
- চাষকালীন সময়ে পানি পরিবতনের পরপরই প্রতি শতাংশে ৫০-১০০ গ্রাম কার্বনেট চুন প্রয়োগ করে পানি শোধন করুন।
- ঘেরের পানির গভীরতা কম পক্ষে ৩-৪ ফুট রাখুন।
- ১৫ দিন বা একমাস অন্তর অন্তর ঘেরের বজ্য পানি বের করে নতুর পানি ঢুকানোর ব্যবস্থা করুন।
- রাক্ষুসে মাছ, কাকরা ও অন্যান্য চিংড়ি ভূক প্রাণী নিয়ন্ত্রণ করুন।
- খামার জলজ আগাছা মুক্ত রাখুন ও বাঁশের কনচি গাছের শুকনা ডালপালা দিয়ে আশ্রয় করে দিন।
*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।
Leave a Reply