রাক্ষুসে মাছ: শোল, গজার, টাকি, বোয়াল, চিতল, আইড়, আফ্রিকান মাগুর, ফলি, কাকিলা, ইত্যাদি।
আমাছা: মলা, ঢেলা, চেলা, চাপিলা, পুঁটি, চান্দা, ছোট ইচা, বইচা।
কেন অপসারণ প্রয়োজন?
- রাক্ষুসে মাছ চাষকৃত মাছের পোনাকে খেয়ে ফেলে, যেমন: রাক্ষুসে মাছ ১ কেজি বড় হতে প্রায় ১০-১২ কেজি অন্য মাছ খায়।
- আমাছা চাষাবাদের মাছের খাদ্য নষ্ট করে, যেমন: ১ কেজি আমাছা ১০-১২ কেজি চাষের মাছ উৎপাদন ব্যাহত করে।
রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণ পদ্ধতি
রাক্ষুসে ও অবাঞ্চিত মাছ/প্রাণী দূরীকরণে নিচের যেকোন একটি পদ্ধতির সহায়তা নেয়া যেতে পারে:
১. পুকুর শুকানো
২. রোটেনন প্রয়োগ
৩. তামাকের গুড়া
৪. ক্যালসিয়াম কার্বাইড
পুকুর শুকানো
পোকা-মাকড়, রাক্ষুসে মাছ ও আমাছা মারার জন্য পুকুর শুকানো সবচেয়ে উত্তম। পুকুর শুকানোর পর কড়া রোদ্রে তলায় ফাটল ধরাতে হবে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে পুকুর শুকালে খরচ কম হয়। ২-৩ বৎসর অন্তর পুকুর শুকানো মাছ চাষের জন্য উপকারি।
রোটেনন প্রয়োগ
রোটেনন ডেরিস গাছের মূল থেকে তৈরি এক ধরনের পাউডার (হালকা বাদামি রং)। মাছ মারা যায় কিন্তু চিংড়ি ও অন্যান্য জলজ কীট মারা যায় না। ৯.১% এবং ৭% শক্তি সম্পন্ন রোটেনন বাজারে পাওয়া যায়। রোটেননের মাত্রা নির্ভর করে তার শক্তির উপর।
রোটেনন এর ডোজ
৯.১% শক্তির রোটেনন = ১৮ গ্রাম/ফুট পানি/শতাংশ
৭% শক্তির রোটেনন = ২৫ গ্রাম/ফুট পানি/শতাংশ
মনে করুন, আপনার পুকুরটি ১০০ শতকের। পুকুরে পানি আছে ৪ ফুট। আপনি যদি ৭% শক্তির রোটেনন ব্যবহার করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার রোটেনন লাগবে ১০ কেজি। আর যদি ৯.১% মাত্রার রোটেনন ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনার রোটেনন লাগবে ৭ কেজি ২০০ গ্রাম।
রোটেনন ব্যবহার পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় রোটেননকে ৩ ভাগ করে, এক ভাগ দ্বারা ছোট ছোট বল তৈরি করতে হবে এবং বাকী দুই ভাগ প্রয়োজনীয় পানি মিশিয়ে তরলীকৃত করে ব্যবহার করতে হবে। ২০-২৫ মিনিট পর মাছ আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে জাল টানতে হবে। প্রয়োগের ১ ঘন্টার মধ্যে সমস্ত মাছ ভেসে উঠবে। রোটেননের কার্যকারিতা প্রয়োগের ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে পানিতে বিদ্যমান থাকে।
রোটেনন ব্যবহারে সতর্কতা
- ব্যবহারের পূর্বে নাক মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে বাতাসের অনুকুলে ছিটাতে হবে।
- মেঘলা কিংবা বৃষ্টির দিনে রোটেনন ব্যবহার করা যাবে না।
- বিষাক্ততার মেয়াদকাল: প্রায় ৭ দিন।
তামাকের গুড়া
তামাকের গুড়া প্রয়োগে মাছ ও শামুক মারা যায় কিন্তু চিংড়ি মারা যায় না। এটি প্রথমে বিষ, পরে সার হিসেবে কাজ করে।
মাত্রা: ০.৮-১.৬ কেজি/ফুট পানি/শতাংশে
ব্যবহার পদ্ধতি: এক রাত বালতির মধ্যে পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর রৌদ্রজ্জল দিনে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।
বিষক্ততার মেয়াদকাল: ৭-১০ দিন।
ক্যালসিয়াম কার্বাইড
কাঁকড়া মারার জন্য ক্যালসিয়াম কার্বাইডের বড়ি অত্যন্ত কার্যকর। কাঁকড়ার গর্তের মধ্যে ৪-৫টি বড়ি রেখে গর্তটি বন্ধ করে দিতে হয়।
*** বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করুন।
Leave a Reply